IQNA

দ্বিতীয় দফায় মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দীদের পরিস্থিতি + ভিডিও

17:33 - November 26, 2023
সংবাদ: 3474706
তেহরান (ইকনা): হামাস এবং ইহুদিবাদী শাসকদের মধ্যে বন্দি বিনিময়ের দ্বিতীয় ধাপটি আজ রবিবার, ২৬শে নভেম্বর সকালে কয়েক ঘন্টা বিলম্বের পর সম্পন্ন হয়েছিল এবং এই পর্বে, ৩৯ ফিলিস্তিনি বন্দী তাদের পরিবারের কাছে ফিরে গিয়েছেন।‌

আল-কাসাম ব্যাটালিয়ন আজ সকালে ইহুদিবাদী বন্দীদের দ্বিতীয় দলকে রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করেছে।
 
ইহুদিবাদী ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মধ্যে স্বাক্ষরিত সাময়িক যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে শনিবার রাতে ইসরাইলি বন্দিদের ১৩ সদস্যের দ্বিতীয় দলকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। সেইসঙ্গে চার বিদেশি নাগরিককেও মুক্তি দেয়া হয়েছে।
 
তবে ইসরাইল যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করায় শনিবারের ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তি কয়েক ঘণ্টা পিছিয়ে যায়। শনিবার নির্ধারিত সময় সন্ধ্যার দিকে হামাসের সামরিক বাহিনী ইজ্জাদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেড ঘোষণা করে, ইসরাইল যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে নির্ধারিত সংখ্যক ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে না। এছাড়া উত্তর গাজায়ও অবাধে ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশে দখলদার সেনারা বাধা দিচ্ছে।
 
 
বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় মুক্তি পেয়ে নিজের পাঁচ সন্তানের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন ফাদওয়া হাম্মাদ নামের এই ফিলিস্তিনি নারী। 
 
কাসসাম ব্রিগেড জানায়, ইসরাইল শর্ত লঙ্ঘন করায় বন্দিদের মুক্তি দিতে দেরি হচ্ছে। এ অবস্থায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওয়াভ গ্যালান্টকে টেলিফোন করে গাজায় প্রবেশ করতে যাওয়া ত্রাণবাহী ট্রাকের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান।
 
শেষ পর্যন্ত অনেক নাটকীয়তা শেষে শনিবার গাজার স্থানীয় সময় রাত ১১টার পর ১৩ ইসরাইলি বন্দি ও ৪ থাই নাগরিককে রেডক্রসের হাতে তুলে দেয় ইজ্জাদ্দিন কাসসাম ব্রিগেড। হামাসের পক্ষ থেকে প্রকাশিত ভিডিওতে সকল বন্দিকে হাসিমুখে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের কাছ থেকে বিদায় নিতে দেখা যায়। ভিডিওতে সকল বন্দিকে সুস্থ ও স্বাভাবিক দেখা যায়। তবে এক ইসরাইলি তরুণীর পায়ে আঘাতজনিত সমস্যা দেখা গেলেও তাকেও হাসিমুখে বিদায় নিতে দেখা গেছে। ৭ অক্টোবরের আল-আকসা তুফান অভিযানের সময় ওই তরুণী পায়ে আঘাত পেয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
 
 
ইসরাইলি বন্দিরা শনিবার রাতেই মিশর হয়ে ইসরাইলে ফিরে গেছে এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে বলে ইহুদিবাদী গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে। এর আগে শুক্রবার মুক্তি পাওয়া ইহুদিবাদী বন্দিদেরকে প্রথমে হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
 
তেল আবিব ধারনা করেছিল, হামাসের নির্যাতনে তাদের বন্দিদের শারিরীক অবস্থা এতটা শোচনীয় থাকবে যে, দীর্ঘদিন তাদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হবে। এজন্য তাদের চিকিৎসার জন্য ছয়টি হাসপাতালকে পূর্ণ প্রস্তুত রাখার কথা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। কিন্তু শুক্রবার রাতেই ইসরাইলি হাসপাতালগুলো জানায় মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের স্বাস্থ্য ভালো আছে। এ কারণে শনিবার রাতে মুক্তি পাওয়া বন্দিদের দৃশ্যত ফিরে যাওয়ার পরপরই তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
 
 
ওদিকে হামাসের হাত থেকে ইসরাইলি বন্দিরা মুক্তি পাওয়ার পর ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পান ৩৯ ফিলিস্তিনি বন্দি। তবে তার আগে বন্দিদের স্বাগত জানাতে আসা হাজার হাজার ফিলিস্তিনির ওপর ইহুদিবাদী সেনারা হামলা চালায় ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এ সময় অন্তত চার ফিলিস্তিনি আহত হন। শেষ পর্যন্ত পশ্চিম তীরের স্থানীয় সময় রাত ১টার পর ফিলিস্তিনি বন্দিরা একটি যাত্রীবাহী বাসে করে নিজ ভূখণ্ডে ফিরে যান। 
captcha