বার্তা সংস্থা ইকনা: মোহাম্মাদ আলী ১৭৬৫ সালে ইসলাম ধর্মে গ্রহণ করেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আগে তার নাম 'ক্যাসিয়াস ক্লে' ছিল। ১৯৬৫ সালে এবং 'সনি লিস্টন'কে পরাজয় করানোর ১৮ দিন পূর্বে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে তখনকার বিখ্যাত মুষ্টিযোদ্ধা সনি লিস্টনকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলে খ্যাতির তালিকায় উঠে আসেন মুহাম্মদ আলী। খেলাধুলার ইতিহাসে সেরা মুষ্টিযোদ্ধাদের মধ্যে একজন হিসেবে গণ্য করা হয় তাকে।
শনিবার সকালে আমেরিকার আরিজোনা প্রদেশের ফিনিক্স এরিনার একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। মুহাম্মদ আলী গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে পারকিনসন্স রোগে ভুগছিলেন। কয়েক বছর ধরে তার অবস্থার আরও অবনতি হয়।
পবিত্র কুরআন থেকে মুহাম্মদ আলীর শিক্ষা অর্জন মোহাম্মদ আলী, আমেরিকার সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা ছিলেন। ভিয়েতনামের সাথে যুদ্ধের সময় তিনি সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করে ঘোষণা করেন: "এই যুদ্ধ পবিত্র কুরআনের শিক্ষার বিরুদ্ধে। একজন মুসলমান হিসেবে আমার এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা উচিত নয়। কারণ এই পথ মহান আল্লাহ এবং তার রাসুলের পথ নয়। এই কারণ আমেরিকান পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এবং বীর মুষ্টিযোদ্ধার খেতাব থেকে তাকে বঞ্চিত করে।
আমেরিকার সেনা বাহিনীকে সেবা প্রদান না করার জন্য মোহাম্মাদ আলীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং এ জন্য বেশ কয়েক বছর বক্সিং রিং থেকে দূরে থাকতে হয় তাকে। কয়েক বছর পর আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট তার শাস্তি মৌকুফ করে।
মুহাম্মদ আলী গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে পারকিনসন্স রোগে ভুগছিলেন। কয়েক বছর ধরে তার অবস্থার আরও অবনতি হয়। এ জন্য তাকে মুষ্টিযুদ্ধ থেকে দুরে থাকতে হয়।
মোহাম্মাদ আলী তার জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও সত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে দ্বিধাবোধ করতেন না। মোহাম্মাদ আলী গতবছরে ডিসেম্বর মাসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তৃতার (আমেরিকায় মুসলিম অভিবাসন প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ) তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনবারের বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন এবং অলিম্পিক লাইট হেভিওয়েট স্বর্ণপদক বিজেতা আলী। ১৯৯৯ সালে মুহাম্মদ আলীর নাম বিবিসি এবং স্পোর্টস ইলাট্রেটেড 'স্পোর্টসম্যান অব দ্য সেঞ্চুরি' অথবা শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ঘোষণা করে।
১৯৭৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর বিখ্যাত বক্সার মোহাম্মদ আলী বাংলাদেশে এসেছিলো। সেরা মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলি যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন। আমাদের সোনার দেশকে তিনি 'বেহেশত' মনে করতেন। এছাড়াও তিনি ১৯৯৩ সালে ইরানে সফর করেন এবং তেহরানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বই মেলায় অংশগ্রহণ করেন।
iqna