IQNA

আদালতের নির্দেশে উত্তর প্রদেশে নিষিদ্ধ হলো মাদ্রাসা

3:23 - March 26, 2024
সংবাদ: 3475276
ইকনা: ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশে মাদ্রাসাভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছেন দেশটির একটি আদালত। শুক্রবার ভারতের এলাহাবাদ হাইকোর্ট এ রায় দিয়েছে।

এ রায়ের ফলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল বিজেপির সঙ্গে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলমানদের দূরত্ব আরেকটু বাড়লো বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী মাসে ভারতে জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। ইসলামভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম হচ্ছে মাদ্রাসা। যেখানে মূলত ইসলাম শিক্ষা দেওয়া হয়।


রয়টার্স জানায়, আদালত শুক্রবার উত্তর প্রদেশের মাদ্রাসা পরিচালনাকারী আইন-২০০৪ বাতিল করে। রায়ে বলা হয়, ‘এই আইন ভারতের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার পরিপন্থী।’

রায়ে মাদ্রাসায় লেখাপড়া করা শিক্ষার্থীদের প্রচলিত স্কুলগুলোতে শিক্ষা গ্রহণের জন্য পাঠানোর কথাও বলা হয়েছে।


এলাহাবাদ হাই কোর্টের এই রায় ২৭ লাখ শিক্ষার্থী, ১০ হাজার শিক্ষক ও ২৫ হাজার মাদ্রাসার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করেন রাজ্যের মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ইফতিখার আহমেদ জাভেদ। উত্তর প্রদেশে মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ মুসলমান।

শুক্রবারের রায়ে বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থী এবং বিবেক চৌধুরী বলেন, ‘রাজ্য সরকার এটাও নিশ্চিত করবে যে রাজ্যের ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী কোনো শিশু যেনো যথাযথভাবে স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়।’

অংশুমান সিং রাঠোর নামে একজন আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে এলাহাবাদ হাই কোর্ট মাদ্রাসা নিষিদ্ধের এই রায় দেন।

অংশুমান সিং কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত কিনা বা তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে বা তাদের মতাদর্শে উৎসাহিত হয়ে হাই কোর্টে এই আবেদন করেছেন কি না জানতে রয়টার্স থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।

আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে ভারতে জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। সাত দফায় ভোট গ্রহণ চলবে ১ জুন পর্যন্ত। ৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষণা করার কথা রয়েছে। এবারের নির্বাচনে মোদির দল বিজেপিই জয়লাভ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কয়েকটি মানবাধিকার ও মুসলমানদের সংগঠন থেকে বিজেপির কিছু সদস্য এবং সহযোগীদের বিরুদ্ধে ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্য প্রদান, প্রশাসনের মাধ্যমে হয়রানি ও মুসলিমদের মালিকানাধীন সম্পত্তিতে ভাঙচুরের অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী মোদি বরাবর ভারতে ধর্মভিত্তিক বৈষম্যের অস্তিত্ব নেই বলে দাবি করেন।

বিজেপি বলেছে, তাদের সরকার ঐতিহাসিক ভুলগুলো ঠিক করে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিচ্ছে। সম্প্রতি ষোড়শ শতকে নির্মিত বাবরি মসজিদের জায়গায় এখন রাম মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়। হিন্দু ধর্মের অনেকের বিশ্বাস যেখানে বাবরি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল সেটি আসলে হিন্দু দেবতা রামের জন্মস্থান এবং মুঘল শাসক বাবর একটি হিন্দু মন্দির ভেঙে সেখানে বাবরি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন।

 

captcha