IQNA

কম্পাসের আবিষ্কারক আল কুহি

0:57 - October 16, 2023
সংবাদ: 3474510
তেহরান (ইকনা): যেসব যন্ত্রপাতি জ্যামিতির চিত্রাঙ্কনকে সহজ করেছে, তার মধ্যে একটি হলো কম্পাস। জ্যামিতিতে নতুন মাত্রা দেওয়া এই গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রটি আবিষ্কার করেছেন একজন মুসলিম বিজ্ঞানী। যাঁর নাম আবু সহল ওয়াইজান ইবনে রুস্তম আল কুহি। অনেকে তাঁকে সংক্ষেপে আল কুহি নামেই চেনে।
কম্পাসের আবিষ্কারক আল কুহিতিনি ৯৪০ সালে ইরানের তাবারিস্তানের কুহি নামক একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এই গ্রামের নামানুসারে তিনি আল কুহি নামে পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি ছিলেন পারস্যের বিখ্যাত বীর রুস্তমের বংশধর। গণিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞানে তিনি ভীষণ দক্ষ ছিলেন।
তাই তো ওমর খৈয়ামের মতো পণ্ডিত ব্যক্তি তাঁকে শ্রেষ্ঠ গণিতজ্ঞ হিসেবে বিবেচনা করতেন।  তাঁর গবেষণার মূল ক্ষেত্র ছিল জ্যামিতি। তাই সমসাময়িক বিজ্ঞানীরা তাঁকে সর্বোত্তম জ্যামিতজ্ঞ বিবেচনা করতেন। তিনি তাঁর রচনাবলিতে বহু জ্যামিতিক সমস্যার সূক্ষ্ম সমাধান দিয়েছেন।
যেগুলো পরবর্তীকালে দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করত।
কম্পাস আবিষ্কার : জ্যামিতির চিত্রাঙ্কনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানকারী যন্ত্র হলো কুহির আবিষ্কৃত কাঁটা কম্পাস। তিনি তাঁর রচিত গ্রন্থ ‘রিসালা ফিল বারকার আল-তাম’—এ প্রথম কণিক কম্পাসের ধারণা দেন। কুহি প্রথম এক পাবিশিষ্ট এই কম্পাসের সাহায্যে সরলরেখা, বৃত্ত ও কোণ অঙ্কন করেন। গ্রন্থটিতে তিনি আরো অনেক যন্ত্রপাতি তৈরির কৌশল বর্ণনা করেন।
 
সেখানে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন, যে কেউ সহজে অ্যাস্ট্রোল্যাব, সূর্যঘড়ি ও অনুরূপ যন্ত্রপাতি তৈরি করতে পারে। তাঁর এই গ্রন্থটি এতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে জ্যোতির্বিজ্ঞানী আল বেরুনি কুহির গ্রন্থটি সংগ্রহ করে দেওয়ার জন্য তাঁর শিক্ষক আবু নাসের মনসুর ইবনে ইরাককে অনুরোধ করেন। আবু মনসুর তাঁর বন্ধু ইবনে আল হোসেনের দ্বারস্থ হন। ইবনে আল হোসেন অন্য একটি বইয়ে কুহির গ্রন্থের উদ্ধৃতি দেখতে পান। কিন্তু মূল গ্রন্থটি উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। কুহির গ্রন্থের কোনো কপি না পেয়ে অবশেষে তিনি নিজেই আল বেরুনির জন্য একটি বই লিখেন। তবে তাঁর বইয়ের মান ছিল নিচু।
আল কুহি তাঁর ‘রিসালা ফিল বারকার আল-তাম’ এর একটি অংশে অ্যাস্ট্রোল্যাব নির্মাণের সমস্যাবলি নিয়েও আলোচনা করেছেন। তাঁর উল্লিখিত বইটি দুটি অংশে বিভক্ত। প্রথমাংশে রয়েছে চারটি অধ্যায় এবং দ্বিতীয়াংশে সাতটি। আল কুহি তাঁর গ্রন্থে মানচিত্র অঙ্কনের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দিয়েছেন। এ ছাড়া আল কুহি গ্রিকদের উচ্চতর জ্যামিতিকে ইসলামী বিশ্বে পুনরুজ্জীবিত এবং চালু করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি জ্যামিতিতে দ্বিঘাত ও ঘন সমীকরণের সমাধান দিয়েছেন।
 
(সূত্র : স্বর্ণযুগে মুসলিম বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার অবলম্বনে)
captcha