IQNA

পবিত্র প্রতিরক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে সর্বোচ্চ নেতা;

আত্মসমর্পণের মাধ্যমে নয়, প্রতিরোধের মাধ্যমেই দেশকে রক্ষা করা সম্ভব

14:18 - September 21, 2022
সংবাদ: 3472509
তেহরান (ইকনা): ইসলামি বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা পবিত্র প্রতিরক্ষা বাহিনীর কমান্ডার ও যোদ্ধা এবং শহীদদের পরিবারের এক সভায় বলেন: প্রবীণরা "আস-সাবেকুনাল আওয়ালুন"-এর উদাহরণ, তারা «السابقون السابقون» "আল-সাবাকুনাস সাবেকুন"-এর (অগ্রবর্তিগণই তো অগ্রবর্তী) উদাহরণ, অর্থাৎ, যারা অন্যদের চেয়ে আগে একটি প্রয়োজন চিনতে পেরেছেন এবং সেই প্রয়োজন পূরণের জন্য ছুটে গিয়েছেন।

পবিত্র প্রতিরক্ষার একদল প্রবীণ, কমান্ডার এবং যোদ্ধা এবং শহীদদের পরিবার আজ সকালে পবিত্র প্রতিরক্ষা সপ্তাহের প্রাক্কালে ইমাম খোমেনী (রহ.) নামক হোসাইনিয়ায় ইসলামী বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।
রেডিও এবং টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত এই বৈঠকে ইরানের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে পবিত্র প্রতিরক্ষার অন্যান্য প্রবীণগণ ভিডিওর মাধ্যমে সর্বোচ্চ নেতার সাথে অংশগ্রহণ করেছেন। 
 
এই বৈঠকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, ইরাকের সাবেক স্বৈরশাসক সাদ্দামের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আট বছরের পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে, একমাত্র প্রতিরোধ সংগ্রামের মাধ্যমে আগ্রাসী বাহিনীর হাত থেকে মাতৃভূমিকে রক্ষা করা সম্ভব। 
 
ওই যুদ্ধ শুরুর বার্ষিকী উপলক্ষে পবিত্র প্রতিরক্ষা সপ্তাহকে সামনে রেখে দেশ রক্ষায় আত্মনিয়োগকারী এসব ব্যক্তিত্ব আজ সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত আগ্রাসী ইরাকি বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ আট বছরের প্রতিরোধ যুদ্ধকে ইরানে পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধ নামে অভিহিত করা হয়।
 
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, ওই যুদ্ধে ইরানি জনগণের সামনে এ সত্য দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, আত্মসমর্পন নয় বরং প্রতিরোধের মাধ্যমেই দেশরক্ষা ও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা যায়। তিনি বলেন, ইসলামি বিপ্লবের পর এরকম একটি আগ্রাসন হতে পারে এটা জানা ছিল। সাদ্দাম এ আগ্রাসন চালিয়েছিল ঠিকই কিন্তু তার পেছনে ছিল বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ।
 
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধ থেকে আমাদের অর্জন অনেক। ওই যুদ্ধ আমাদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। কাজেই পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধারা সর্বোচ্চ সম্মান পাওয়ার যোগ্য।
 
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরান গোটা বিশ্ববাসীকে কিছু বলতে চেয়েছিল। কিন্তু ইরানের সে বার্তা যেন অন্য কেউ গ্রহণ করতে না পারে সেজন্য বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ইরাকের সাদ্দাম সরকারের মাধ্যমে ইরানের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। তারা একথা বলতে চেয়েছিল যে, যদি কেউ সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার  বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তবে তাকে শেষ করে দেয়া হবে। ইসলামি বিপ্লব আমেরিকা ও ইউরোপীয় দেশগুলোর বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিল বলেই তারা তেহরানের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল।
 
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, সেই সময় বিশ্বের দেশগুলো প্রাচ্য অথবা পাশ্চাত্য- এই দুই ব্লকের যেকোনো এক ব্লকে ছিল এবং এর বাইরে কোনো স্বাধীন দেশ ছিল না বললেই চলে। সেই অবস্থায় একটি দেশের বিপ্লবী সরকার দুই পরাশক্তির কারো অধীনতা মেনে না নিয়ে স্বাধীনভাবে কথা বলবে- এটা কেউ ভাবতেই পারেনি।
 
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, তখন থেকে বিগত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ইরান বিশ্বের সকল পরাশক্তিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যাবে। তিনি নতুন প্রজন্মকে প্রতিরোধের সংস্কৃতি বুকে ধারন করার আহ্বান জানান।
 
সর্বোচ্চ নেতার ভাষণের আগে ইরানের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ বাকেরি পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। তিনি পবিত্র প্রতিরক্ষা সপ্তাহ উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পর্কেও একটি সার্বিক চিত্র আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর সামনে তুলে ধরেন। 4086952
 
 
captcha